এ তুমি কেমন তুমি

চশমার কাচটা মুছতে মুছতে দমদম এয়ারপোর্টের লাউঞ্জ ছেড়ে সামনের দিকে এগিয়ে গেল মঞ্জীর। মুম্বাইয়ের ফ্লাইটের অ্যানাউন্সমেন্ট হয়ে গিয়েছে। সঙ্গের হাতব্যাগটা খুলে চশমাটা ভেতরে রাখল সে। প্লেনের ভিতর এয়ারহোস্টেস টিকিট অনুযায়ী জানলার ধারের একটি সিট দেখিয়ে দিল …। কাচের মধ্যে দিয়ে যতদুর চোখ যায় সে তাকিয়ে দেখল…এই অপরিচিত কলকাতা শহরটাকে ছেড়ে যেতে তার বেশ মনখারাপ লাগছিলো। ব্যাগের ভেতর থেকে চশমাটা বার করতে গিয়ে প্যাকেটটা চোখে পড়তেই…মনে মনে ভাবল…’ কি এটা? । পিয়াল একবার দেখা করতেও এল না…অথচ গিফট প্যাকটা রিসেপশনে রেখে গেছে’ ..অফিসের গেস্ট হাউস ছাড়ার সময় কেয়ারটেকার প্যাকেটটা মঞ্জীরকে দিল …। একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলল সে… মোড়কটা খুলতেই তার ম্লান মুখটা যেন শেষ বিকেলের চুরি যাওয়া আলোয় রক্তিম হয়ে উঠল। তার ভীষন পছন্দের একটা বই…জয় গোস্বামীর ‘ পাগলী তোমার সঙ্গে ‘…প্রথম পাতা ওল্টাতেই দেখল নিচে লেখা…” আমার জন্মদিনে আজ তোমায় দিলাম…পাগল”…তার একটু নিচে আজকেরই তারিখটা…। এক লহমায় অদ্ভুত একটা ভাল লাগায় তার চোখটা চিক চিক করে উঠল। তার ভীষণ ইচ্ছে হতে লাগল সমস্ত অভিমান ভুলে ছুটে যায় পিয়ালের কাছে…। তার বুকের ওপর আছড়ে পড়ে বলে…”আগে কেন বললে না ? …আমি তো ফিরতে চাইনি……”
এয়ার হোস্টেস মঞ্জীরকে সিকিউরিটি বেল্ট বাঁধতে অনুরোধ জানালো…। প্লেন ছুটে চলল গ্রাউন্ডের ওপর দিয়ে…। তার গতি আশেপাশের সব কিছুকে ছাড়িয়ে একলাফে যেন আকাশ ছুঁয়ে ফেলল। জানলার কাচের ভেতর দিয়ে মঞ্জীর চেয়ে রইল নিচে ফেলে আসা কলকাতার ব্যস্ত পথঘাট দোকানপাট ,অফিস-কাছারী!!!