
অলীক সত্য@Oindrila
বট গাছটার বেদীর পিছন থেইকে ভেইসে আসতিছে বিকট পোড়াগন্ধটা….আইজ হপ্তাখানেক হইল নূরপুর শ্মশানঘাটের ইলেকট্রিক চুল্লীটা কাজ করতিছে না। অগত্যা সেই-ই কাঠের চিতেয় পুড়তিছে বৈজু। মাঝে মাঝে বাঁশপেটা করতিছে ডোমটা…। সাজিয়ার মাথাটা ক্যামন ঘুইরছে , কানটা ভোঁ ভোঁ কইরছে, গাটাও গুইলোচ্ছে….বসতির সবাই মিলে ধরাধইরি কইরে ,তারে এইনে বইসিছে বটের ছাওয়ায়। কালো ধোঁয়া উইড়ে পুইড়ে খাক কইরে দিচ্ছে বৈজুর রক্ত মাখা নিথর দেহটারে….।
দূরে কাত্যায়নী মন্দিরের দাওয়ায় চোরের মত মুখ কইরে, মাথায় হাত দিয়ে বইসে আছে কাঁদন… চোখ দুইটোতে ক্যামন মায়া উপচিয়ে পইড়ছে….পাঁচ বইছরের বিনুটার মাথা নিজের কোলের মইধ্যে গুঁইজে রাইখেছে কাঁদন…..। বাপের মুখে আগুন ছুঁইয়ে বিনুটা যেন ক্যামন ভ্যাবলা মেরে গেইছে। কাঁদন যে আইজ ক্ষমা করতি পারতিছে না নিজেরে, তারই জন্যিই তো আইজ এমনি বিপত্তি ….পার্টি আপিসের ঐ ছিইলেগুলান যদি তারে টেইনে নিইয়ে না যেইত …… আর তাই দেইখে যদি তারে বাঁচাইতে হেঁসো হাতে বৈজু না ছুইটতো ….তবে বন্ধ কারখানার মেশিন ঘরে ওই হেঁসোরই এক কোপে লুটিয়ে পড়তি হইত না বৈজুরে!!!!!
পাঁচ মাসের পোয়াতি সাজিয়া হাত নেইড়ে কাছে ডাইকলো কাঁদনরে….সে জাইনে না কাইল কি হইব? তাদের পেট চলবে কোথ্থকেন? শুধু জাইনে এই বাপ মা মরা কচি বেধবা কাঁদনটারে বাঁচাইতে হইব,নাইলে বৈজুর মরণটা যে পানসে হইয়ে যাইব….ধীর পায়ে হেঁইটে গেইল কাঁদন…সেও জাইনে সাজিয়া বাচ্চা না বিয়োনো পর্যন্ত সব দায় যে এখন তারই….কাঁদন চোখের জল মুইছে সাজিয়ারে জাপটে ধইরল… সাজিয়া কাঁদনরে বুকে টেইনে নিইয়ে ভাবলো,এরপরও ভোট চাইতে আইসে শয়তানগুলান, পাল্টা দরদ দেখাইতে আইসে উন্য পার্টি ….কাদা ছোঁড়াছুঁড়ি কইরে ধামাধইরা লোকগুলান একে অন্যেরে…. ভোট কাইটাকাইটিতে কাইল জিতবে হয়ত উন্য দল….কিন্তু বৈজু কি আর ফিরে আইসবে???? জাইনতে পারবে খপরটা… এইবারে সাজিয়ার পেটেরটা মেইয়ে না ছিইলে ???