জীবনে যতটা আঁধার দেখে আমরা কষ্ট পাই ,তার চেয়েও কিন্তু অজানা অন্ধকার আরও আরও বেশি বিরহের …’যখন বিষন্নতা ঝরে পড়ে কালোজামের মত ‘…………’আম কাঁঠালের মত বার্ধ্যকেরও একটা ঋতু আছে’….যা প্রকৃতির এমনএক পরিপূর্ণ পরিস্ফুট ফল, যা বৃন্তচ্যুত হওয়ার জন্যে অপেক্ষমান……হ্যাঁ বার্ধক্য-জরা-ব্যাধি-মৃৃত্যু…
…………’আছে দুঃখ, আছে মৃত্যু ,বিরহ দহন লাগে/
……..তোমার পারের যাত্রা তুমি কবেই শেষ করে গেছ…..কী রেখ গেছ তার ইতিহাস আজও আমরা খুঁজে বেড়াই….তোমার অকৃত্রিম সাধনা আজও আমাদের প্রাণে নতুন উষার ইঙ্গিত বয়ে আনে যার জেরে আজও আমার মত অসংখ্য মানুষের হাসি কান্না সুখ দুঃখ তোমার মাঝে সমাহিত…..যে বিপুল বিস্তার তোমার সৃষ্টি তে উদ্ভাসিত আমি নিতান্তই এক অর্বাচীন , কতটুকুই বা তার খোঁজ রাখি ,তবু যেন মনে হয় জীবনের প্রতিটি অনুভবের সারাৎসার তোমার সৃষ্টির মাঝেই বিলীন ।তাই মনে হয় জীবনের যে গভীরবোধ সেই ছেলেবেলা থেকে অস্থি মজ্জা রক্তে মাংসে মিশে আছে কী তার উৎস….কী তার তাৎপর্য..কোন সেই দেবকান্তি ঐশ্বরিক অস্তিত্ব ….যার প্রয়াণে আপামর জনসাধারণ এখনও মনখারাপের ভেলায় ভেসে যায় আজকের দিনে …..?….বাঙালীর আঙিনায় কোন সে মহাপ্রস্থান…যা শ্রাবনের বিরহঘন আকাশ থেকে তোমার তরে ডাক পাঠিয়েছিল ,যার অমোঘবাণী তুমিও ফেলতে পারো নি ?…তোমার ঐ সৃষ্টিতে কি সেই টান আজও বলবৎ আছে যার জোরে প্রকৃতির সকল রূপমাধুরী আজ বড়ো নিশ্চুপ….? তোমার নামের আড়ালে কি সেই নৈঃশব্দ যা আজও আমাদের নির্বাক করে তোলে ……???
…..পরিশেষে এইটুকু বলি….তোমার পরিচয়ের পরিনাম আমাদের দিয়েছে অনাদিকালের এক অনাহতবাণী…..যা ধ্বনিত হয়েছে অনন্তকালের অভিমুখে….আর তোমার সেই বিশ্ববাণীর সারবত্তা হল……’আনন্দ করো তাই নিয়ে ,যা তোমার কাছে সহজে এসেছে….যা রয়েছে ….তোমার চারিদিকে তার মধ্যেই তোমার চিরন্তন সত্যের খোঁজ ‘…….. ।
‘নাহি ক্ষয় ,নাহি শেষ, নাহি নাহি দৈন্যলেশ…..
সেই পূর্ণতার পায়ে মন স্থান মাগে ॥’
_____________________________________________________________________________________________________/২২শে শ্রাবন, ১৪২১