পর্ব – ৭
রাংতার চোখে আজ একরাশ বিষাদ…তবু সে অনড় তার প্রতিজ্ঞায় …জানলার বাইরের নিগ্রো আকাশটা যেন বিরহের অজুহাতে সমস্ত মেঘকে জাপটে ধরে রেখেছে তার বাহুবন্ধনে…।এ যেন এক বন্য ভালোবাসায় মেতে ওঠার পূর্বপ্রস্তুতি ।…এমন সময় বিছানার পাশে রাখা ফোনটা বেজে উঠল …
-হ্যালো……কে বলছেন?……হ্যালো…আরে বাবা কথা বলবেন তো? ফোনটা শুধু শুধু ধরে রেখেছেন কেন? হ্যালো…কে?
-কে বলতে হবে?…আমার শ্বাস-প্রশ্বাসে চেনা যায়না বুঝি এখনও? …হ্যালো তুই আবার চুপ কেন? কি ভাবছিস, কথা বলবি কিনা?
-হুম ভাবছি তোর ‘ভীষ্মের পণ’ গেল কোথায়?
-ধ্যুর…আমি আবার পণ করলাম কোথায়? তুইই তো বললি…‘যোগাযোগ বন্ধ । ভেঙ্গে দাও সান্নিধ্যের সাঁকো ’
– কিন্তু শেষ কথাটা বলেছিলাম ,… ‘দেখব তুইও কত বড় সাধক বাউল?’
-ছাড় না রাংতা এসব মন কষাকষি …ভালোবাসা-বাসিতে আবার জেদাজেদী কিসের??…আমার মন কেমন করছে!
-কেন? আবার কি হল?
-রবি ঠাকুরের ওই গানটা মনে পড়ছে… “ মেঘ বলেছে যাব যাব/ রাত বলেছে যাই/ সাগর বলে কূল মিলেছে / আমি তো আর নাই…/ দুঃখ বলে রইনু ছুপে /তোমার পায়ের চিহ্ন রূপে …
-তোর দুঃখ হয় মহুল??
-হয় তো…এই এখন যেমন তোর জন্য হচ্ছে…তোকে ভীষণ দেখতে ইচ্ছে করছে রাংতা …বিশ্বাস কর ,আমার ঘরের জানলা দিয়ে দূরে দেখা যাচ্ছে কাঁসাই…মন বলছে তোর হাত ধরে টেনে নিয়ে যাই ওই কংসাবতীর চরে, আর এই পাগল করা বৃষ্টিতে উদ্দাম ভিজে চলি দুজনে…আমি জানি রাংতা আমি তোকে যন্ত্রণা দি…অবহেলা করি…তুই কি ভাবিস আমি না বুঝে এমন করি…নারে আমি বুঝি…স-ব বুঝি…তোর রাগ অভিমান ছটফটানি…তোর নিস্তব্ধতা…সব… স-ব বুঝি।
-তাই বুঝি…তবে সরে থাকিস কেন অমন করে? দিনের পর দিন ইচ্ছে করে আমাকে সরিয়ে রাখতে পারিস কি করে মহুল?
-কি করব বল ?…মন যে বলে তুই আমারই বন্ধুর বাগদত্তা…তোকে চাইতে নেই…পেতে নেই …ছুঁতেও নেই। ঝিলাম যে তোকে রেখে গেছে গচ্ছিত!!
-ভুল.. গচ্ছিত না….অরক্ষনীয়া ? মনে পড়ে মহুল…কলেজের সেই দিনগুলোর কথা?… জানিস তুই যেদিন প্রথম ঝিলাম আর আমার মাঝে ঝগড়ার বোঝাপড়া করতে এসেছিলি … সেদিনই তোর চোখে হারিয়েছিলাম আমি… দেখেছিলাম বারবাগ্নি!!
-হ্যাঁ হ্যাঁ …আর তাই পরে কোনও একসময় বলেছিলি…আমার চোখেই নাকি তোর মরণ লুকিয়ে আছে? যদিও সেদিন চৈত্রমাস ছিল না তবু তুই বসেছিলি সর্বনাশের আশায়!!
-বৃষ্টি শুরু হব হব মহুল, …কিন্তু আমি তো ভিজে চলেছি সেই কবে থেকে… আমি স্বৈরিণী হতেও রাজি আছি মহুল ,যদি তুই পাশে থাকিস…যদি দিস এক টুকরো ছেঁড়া পালের ভরসা আমি আমার সম্পান ভাসাব তোর ওই কাঁসাই-এর ভরা জলে …ফিরিয়ে দেব অহঙ্কারী ঝিলামকে…
-আমার মনের মধ্যে অদ্ভুত একটা যুদ্ধ চলছে রাংতা…তোর বাবার সামনে দাঁড়ানোর আগে আমাকে যে ঝিলামের মুখোমুখি হতেই হবে? জানতে হবে ও কি বলছে?
-থাক মহুল থাক…স্বপ্ন দেখলে কেউ নষ্ট হয় না…তাই তোর স্বপ্নে আমি ভিজে গেলেও নষ্ট হয়ে যাব না…তোর এই সমর্পণটুকুতেই আমার শান্তি… আমি তো জানি তুই ভাঙবি তবু মচকাবি না।
-হা হা হা…একদম ঠিক চিনেছিস আমায়…আর আমারও এইটাই শান্তি আমার ভাঙনটা তুই দেখতেই চাস না…সামলে দিস আমায়…কিন্তু এবার যে কাঁসাই-এর জল বাড়ছে রাংতা… ফুলে ফেঁপে উঠছে কাঁসাই…
-উফফফ সাধে কি বলি …তুই বানভাসি!!!!
-হ্যাঁরে …আর তুই কি কম বড়ো সব্বনাশী…বারেবারে পাড় ভাঙ্গার শব্দে ভাসিয়ে দিস নিজেকে?
-তুই কবে আসবি কোলকাতা?
-আসব রাংতা আসব , খুব শিগগিরী …। আসতে যে আমাকে হবেই…কিন্তু তোর কাছে গেলেই যে আমি মহুল পাগলা …হ্যাংলা ভিখিরী।
-বেশ …আমি কথা দিলাম তুই কাছে আসলেও আমি এবার বৈরাগী হয়ে যাব। মন প্রাণ সব সঁপে দেব অচীন পাখির সাধনায়…।
…………………….. …………………….. …………………….. …………………….. ……ক্রমশ
-কে বলতে হবে?…আমার শ্বাস-প্রশ্বাসে চেনা যায়না বুঝি এখনও? …হ্যালো তুই আবার চুপ কেন? কি ভাবছিস, কথা বলবি কিনা?
-হুম ভাবছি তোর ‘ভীষ্মের পণ’ গেল কোথায়?
-ধ্যুর…আমি আবার পণ করলাম কোথায়? তুইই তো বললি…‘যোগাযোগ বন্ধ । ভেঙ্গে দাও সান্নিধ্যের সাঁকো ’
– কিন্তু শেষ কথাটা বলেছিলাম ,… ‘দেখব তুইও কত বড় সাধক বাউল?’
-ছাড় না রাংতা এসব মন কষাকষি …ভালোবাসা-বাসিতে আবার জেদাজেদী কিসের??…আমার মন কেমন করছে!
-কেন? আবার কি হল?
-রবি ঠাকুরের ওই গানটা মনে পড়ছে… “ মেঘ বলেছে যাব যাব/ রাত বলেছে যাই/ সাগর বলে কূল মিলেছে / আমি তো আর নাই…/ দুঃখ বলে রইনু ছুপে /তোমার পায়ের চিহ্ন রূপে …
-তোর দুঃখ হয় মহুল??
-হয় তো…এই এখন যেমন তোর জন্য হচ্ছে…তোকে ভীষণ দেখতে ইচ্ছে করছে রাংতা …বিশ্বাস কর ,আমার ঘরের জানলা দিয়ে দূরে দেখা যাচ্ছে কাঁসাই…মন বলছে তোর হাত ধরে টেনে নিয়ে যাই ওই কংসাবতীর চরে, আর এই পাগল করা বৃষ্টিতে উদ্দাম ভিজে চলি দুজনে…আমি জানি রাংতা আমি তোকে যন্ত্রণা দি…অবহেলা করি…তুই কি ভাবিস আমি না বুঝে এমন করি…নারে আমি বুঝি…স-ব বুঝি…তোর রাগ অভিমান ছটফটানি…তোর নিস্তব্ধতা…সব… স-ব বুঝি।
-তাই বুঝি…তবে সরে থাকিস কেন অমন করে? দিনের পর দিন ইচ্ছে করে আমাকে সরিয়ে রাখতে পারিস কি করে মহুল?
-কি করব বল ?…মন যে বলে তুই আমারই বন্ধুর বাগদত্তা…তোকে চাইতে নেই…পেতে নেই …ছুঁতেও নেই। ঝিলাম যে তোকে রেখে গেছে গচ্ছিত!!
-ভুল.. গচ্ছিত না….অরক্ষনীয়া ? মনে পড়ে মহুল…কলেজের সেই দিনগুলোর কথা?… জানিস তুই যেদিন প্রথম ঝিলাম আর আমার মাঝে ঝগড়ার বোঝাপড়া করতে এসেছিলি … সেদিনই তোর চোখে হারিয়েছিলাম আমি… দেখেছিলাম বারবাগ্নি!!
-হ্যাঁ হ্যাঁ …আর তাই পরে কোনও একসময় বলেছিলি…আমার চোখেই নাকি তোর মরণ লুকিয়ে আছে? যদিও সেদিন চৈত্রমাস ছিল না তবু তুই বসেছিলি সর্বনাশের আশায়!!
-বৃষ্টি শুরু হব হব মহুল, …কিন্তু আমি তো ভিজে চলেছি সেই কবে থেকে… আমি স্বৈরিণী হতেও রাজি আছি মহুল ,যদি তুই পাশে থাকিস…যদি দিস এক টুকরো ছেঁড়া পালের ভরসা আমি আমার সম্পান ভাসাব তোর ওই কাঁসাই-এর ভরা জলে …ফিরিয়ে দেব অহঙ্কারী ঝিলামকে…
-আমার মনের মধ্যে অদ্ভুত একটা যুদ্ধ চলছে রাংতা…তোর বাবার সামনে দাঁড়ানোর আগে আমাকে যে ঝিলামের মুখোমুখি হতেই হবে? জানতে হবে ও কি বলছে?
-থাক মহুল থাক…স্বপ্ন দেখলে কেউ নষ্ট হয় না…তাই তোর স্বপ্নে আমি ভিজে গেলেও নষ্ট হয়ে যাব না…তোর এই সমর্পণটুকুতেই আমার শান্তি… আমি তো জানি তুই ভাঙবি তবু মচকাবি না।
-হা হা হা…একদম ঠিক চিনেছিস আমায়…আর আমারও এইটাই শান্তি আমার ভাঙনটা তুই দেখতেই চাস না…সামলে দিস আমায়…কিন্তু এবার যে কাঁসাই-এর জল বাড়ছে রাংতা… ফুলে ফেঁপে উঠছে কাঁসাই…
-উফফফ সাধে কি বলি …তুই বানভাসি!!!!
-হ্যাঁরে …আর তুই কি কম বড়ো সব্বনাশী…বারেবারে পাড় ভাঙ্গার শব্দে ভাসিয়ে দিস নিজেকে?
-তুই কবে আসবি কোলকাতা?
-আসব রাংতা আসব , খুব শিগগিরী …। আসতে যে আমাকে হবেই…কিন্তু তোর কাছে গেলেই যে আমি মহুল পাগলা …হ্যাংলা ভিখিরী।
-বেশ …আমি কথা দিলাম তুই কাছে আসলেও আমি এবার বৈরাগী হয়ে যাব। মন প্রাণ সব সঁপে দেব অচীন পাখির সাধনায়…।
……………………..