10384305_682403161849928_6394064457122891236_n

oimookh/ @indrila

জীবনে যতটা আঁধার দেখে আমরা কষ্ট পাই ,তার চেয়েও কিন্তু অজানা অন্ধকার আরও আরও বেশি বিরহের …’যখন বিষন্নতা ঝরে পড়ে কালোজামের মত ‘…………’আম কাঁঠালের মত বার্ধ্যকেরও একটা ঋতু আছে’….যা প্রকৃতির এমনএক পরিপূর্ণ পরিস্ফুট ফল, যা বৃন্তচ্যুত হওয়ার জন্যে অপেক্ষমান……হ্যাঁ বার্ধক্য-জরা-ব্যাধি-মৃৃত্যু…… আর মৃৃত্যুর সেই অমানিশা পেরিয়ে কোন সে দেবদূত আমাদের ইহলোকে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করতে পেরেছেন আজ পর্যন্ত ??
…………’আছে দুঃখ, আছে মৃত্যু ,বিরহ দহন লাগে/তবুও শান্তি ,তবু আনন্দ,তবু অনন্ত জাগে’…..তোমার সৃষ্টির জন্ম লগ্নে আমি ছিলাম না এ যেমন সত্য …..তেমনি সত্য ,কাছের মানুষকে হারানোর ব্যথার মতই তোমার না থাকা আজও বড়ো ভারবাহী আমার কাছে…..মৃত্যু মানুষের জীবনে নির্মম সত্য ….যা ছিলো আর যা নেই..এই দুয়ের মাঝে যোগসাধনের একটাই শব্দ মৃত্যু ।যখনই কোনো মৃত্যুর সম্মুখীন হয়েছি বা শুনেছি একটাই চরম অনুভূতি মনের মাঝে ঝড় তুলেছে ….শূন্যতা………সেই নিশ্চিত বিরহদহনকে তুমি শব্দান্তরিত করেছ ‘নাই অন্ধকারের বেড়া’ বলে….শূন্যতাকে মানুষ কোনোভাবেই বিশ্বাস করতে চায় না…..অথচ যা নেই…ভাবছি আছে…..তা তো অলীক….মিথ্যে….তবু আমরা সবাই মরীচিকার মত যা দেখা যায় না,তাই দেখতে চেষ্টা করি….যা পাওয়া যাই না ,তাই পেতে চেষ্টা করি ….যা ছোঁয়া যায় না ,তাই ছুঁয়ে দেখতে চাই…..আর এই অসম্ভব সত্য মিথ্যার দ্বন্দ্বে আসে বৈরাগ্য….নিস্পৃহতা…..নিরাসক্ত এক উপলব্ধি …যা তোমাকে শিখিয়েছিল…’জগৎকে সম্পূর্ণ ও সুন্দর করে দেখবার জন্যে দূরত্বে র প্রয়োজন ,আর সেই দূরত্বের নাম ই মৃত্যু!!!!!’……বৈরাগ্যের কৃচ্ছসাধনই মানুষকে মুক্তির পথ দেখায়…..সত্যকে সহজে মেনে নেওয়ার শক্তি দেয় …..এ যেন এক ছুটির সুর…..লৌকিকতার দায় সহ্য করে পারলৌকিক ক্রিয়া যে অতীন্দ্রিয় স্বর্গ সুখের প্রশান্তি মনকে দান করে….তাই বোধহয় মানুষকে সত্য উপলব্ধির পথ বাতলে দেয়…. ।
……..তোমার পারের যাত্রা তুমি কবেই শেষ করে গেছ…..কী রেখ গেছ তার ইতিহাস আজও আমরা খুঁজে বেড়াই….তোমার অকৃত্রিম সাধনা আজও আমাদের প্রাণে নতুন উষার ইঙ্গিত বয়ে আনে যার জেরে আজও আমার মত অসংখ্য মানুষের হাসি কান্না সুখ দুঃখ তোমার মাঝে সমাহিত…..যে বিপুল বিস্তার তোমার সৃষ্টি তে উদ্ভাসিত আমি নিতান্তই এক অর্বাচীন , কতটুকুই বা তার খোঁজ রাখি ,তবু যেন মনে হয় জীবনের প্রতিটি অনুভবের সারাৎসার তোমার সৃষ্টির মাঝেই বিলীন ।তাই মনে হয় জীবনের যে গভীরবোধ সেই ছেলেবেলা থেকে অস্থি মজ্জা রক্তে মাংসে মিশে আছে কী তার উৎস….কী তার তাৎপর্য..কোন সেই দেবকান্তি ঐশ্বরিক অস্তিত্ব ….যার প্রয়াণে আপামর জনসাধারণ এখনও মনখারাপের ভেলায় ভেসে যায় আজকের দিনে …..?….বাঙালীর আঙিনায় কোন সে মহাপ্রস্থান…যা শ্রাবনের বিরহঘন আকাশ থেকে তোমার তরে ডাক পাঠিয়েছিল ,যার অমোঘবাণী তুমিও ফেলতে পারো নি ?…তোমার ঐ সৃষ্টিতে কি সেই টান আজও বলবৎ আছে যার জোরে প্রকৃতির সকল রূপমাধুরী আজ বড়ো নিশ্চুপ….? তোমার নামের আড়ালে কি সেই নৈঃশব্দ যা আজও আমাদের নির্বাক করে তোলে ……???
…..পরিশেষে এইটুকু বলি….তোমার পরিচয়ের পরিনাম আমাদের দিয়েছে অনাদিকালের এক অনাহতবাণী…..যা ধ্বনিত হয়েছে অনন্তকালের অভিমুখে….আর তোমার সেই বিশ্ববাণীর সারবত্তা হল……’আনন্দ করো তাই নিয়ে ,যা তোমার কাছে সহজে এসেছে….যা রয়েছে ….তোমার চারিদিকে তার মধ্যেই তোমার চিরন্তন সত্যের খোঁজ ‘…….. ।

‘নাহি ক্ষয় ,নাহি শেষ, নাহি নাহি দৈন্যলেশ…..
সেই পূর্ণতার পায়ে মন স্থান মাগে ॥’

_____________________________________________________________________________________________________/২২শে শ্রাবন, ১৪২১

© Copyright 2014 @indrila, All rights Reserved. Written For: Oimookh