পর্ব-৬
সকাল থেকে চাঁদ বইগুলো খুঁজে চলেছে , পাচ্ছে না…অথচ এন.ডি.ভাটের ড্রয়িং আর এম.কুরির স্ট্রাকচারের বই দুটো কোথায় যে রেখেছিল মনেই পড়ছে না…..বুক শেল্ফ গুলো সবই প্রায় দেখা হয়ে গেল….বাকি আছে পুরোনো বইয়ের তাকটা….ঐ তাক থেকে বইগুলো একটু নামিয়ে দেখতে পারলে ভালো হত…।
…….তাকের পুরনো বই ঘাঁটতে ঘাঁটতে চাঁদের চোখ এড়ালো না অবন ঠাকুরের হাতে আঁকা বইটা….আর তার পাশের পুর্ণেন্দু পত্রীর’ একশো প্রেমের কবিতা’র বইটা । অবন ঠাকুরের বইটা খুলতেই চোখে পড়ল লেখাটা….”আমার জন্মদিনে আমি…..9.9.1999″….লেখাটা দেখে চাঁদ একটু হাসল….কবিতার বইটা খুলে একটু পাতাগুলো নাড়াচাড়া করতেই সব ওলোট পালোট হয়ে গেল… ।… মনে পড়ে গেল সেই চরম অধ্যায় … ।
….সেই সেদিনের কথা…যেদিন সোহম তাকে রঞ্জার কথা বলেছিল…..সেদিন ড্রয়িং ক্লাসে ভুল সায়োগ্রাফি করায়…নবনীতা ম্যাম খুব বকেছিল চাঁদকে ….টিফিনের পর ক্লাস করতে আর ভালোই লাগছিল না…কেমন যেন মনটা এলোমেলো হয়ে যাচ্ছিল….তার কেটে যাচ্ছিল ….চাঁদ বেরিয়ে এল ক্যাম্পাস থেকে…. । রঞ্জা খুঁজতে এলো যখন জুন বলল….’ওর শরীর খারাপ লাগছিল তাই বেরিয়ে গেছে , রঞ্জাদি ।’ রঞ্জা সোহমকে জানালো …..কথাটা শোনামাত্রই কেমন যেন অস্বস্তিটা বেড়ে গেল সোহমের….একে তো আসার পথে রঞ্জার সাথে সম্পর্কের কথাটা বলেছিল চাঁদকে….তার ওপর আগামী এগারোটা দিন দেখা হবে না ….কারণ সোহমের এন. সি.সি ট্রেনিং ফোর্ট উইলিয়ামে…. তাই চাঁদ কিছু ভুল বুঝে থাকলে ,সেটা ভাঙাবে কেমন করে!
……ওদিকে চাঁদ কলেজ থেকে একাই ফিরে এসেছিল দুপুরবেলা । মেঘলা আকাশ….ঝোড়ো হাওয়া….বিকেলের ম্লান আলোয় চুরি গিয়েছে রোদের দাপট….ভরা ভাদ্রমাস…..কিন্তু বৃষ্টি সঙ্গ ছাড়ে নি ।সন্ধ্যের মুখে আকাশ ভেঙে ভীষণ বৃষ্টি….প্রকৃতির আচরণে যেন এক তীব্র প্রতিবাদ….কি যেন এক অস্হিরতার পরিসমাপ্তি….অধীর আগ্রহে সোহম একটা ফোনের অপেক্ষা করছিল….ফোনটা নিজে থেকে করতে একটু ইতস্ততই করছিল…..ঠিক এমন সময় চাঁদের ফোনটাই এলো…..
হ্যালো….
ফোনের ওপারে নিস্তব্ধ চাঁদ আর রবীন্দ্র সংগীত ….’আজি ঝরঝর মুখর বাদল দিনে/জানি নে ,জানি নে/কিছুতে কেন যে মন লাগে না…..’….সোহম জিজ্ঞেস করল ‘কিরে গান শুনছিস….আজ হঠাৎ চলে এলি কেন ক্লাস ছেড়ে ?’
চাঁদ: মাথা যন্ত্রণা করছিল ।
সোহম: সত্যি???
চাঁদ: হুম
সোহম: ফিরে এসে কি করলি…ঘুমোলি?
চাঁদ: না, কবিতা পড়ছিলাম ।
সোহম: কার লেখা ?
চাঁদ: পুর্ণেন্দু পত্রী ।
সোহম: একটা কবিতা বল শুনি..
চাঁদ: থাক না আজ….পরে কোনোদিন বলব…
সোহম: আজ এত মেপে কথা বলছিস কেন !….আগে তো কত লেখা আমরা দুজনেই পড়ে শুনিয়েছি….বল না প্লিজ… ।
চাঁদ: (একটু চুপ করে থেকে) ….
সেই ভালো , শুধু শব্দে থাকো ।
সম্বোধনে, শুধু উচ্চারণে
তোরঙ্গে যেমন থাকে
তোলা শাড়ী পরিপাটি ভাঁজে,
সর্বাঙ্গের ভাঁজে সে থাকে না ।
খাম ও চিঠির মধ্যে
যেরকম অঙ্গাঙ্গি ও স্পষ্ট আলিঙ্গন
সেরকম তোমাকে পাব না ।
গমনাগমন বন্ধ
ভেঙে দাও সান্নিধ্যের সাঁকো ।
সেই ভালো ,শুধু শব্দে থাকো ।
চাঁদের এই কবিতায় সোহমের আর বুঝতে বাকি রইলনা কিছুই ….অদ্ভুত একটা অজানা দমবন্ধ করা অনুভুতি নতুন করে ঘিরে ধরলো সোহমকে….বেশ কয়েকটা মুহূর্ত দুজনেই চুপ থাকার পর ….সোহম বলল ‘আমাদের একসাথে যাতায়াতটা বন্ধ করতে হবে চাঁদ….সত্যি বলতে আমিও বোধহয় তরল হয়ে যাচ্ছি …..রঞ্জাও আমার প্রতি কেমন যেন শীতল হয়ে যাচ্ছে ….তুই পারবি না চাঁদ সব ঠিক করে দিতে….তোর কাছে তো সব কিছুর জবাব তৈরি….?’
চাঁদ: নিজের সম্পর্কে খুব উচ্চ ধারণা পোষণ না করাই ভালো…….ও ভাবে ভাবাটা বন্ধ কর ।
কয়েকটা কথা বলি ওম্…রঞ্জাদিকে যথেষ্টই আকর্ষক লাগে …আর তুই ওকে উদ্ধার করার মানসিকতায় সম্পর্ক তৈরি করেছিস ….এটা বোঝাতে যাস না প্লিজ….ভালোবাসায় সুন্দর অসুন্দর বলে কিছু হয়না ….আর আমি …মোটেই তোর প্রেমে পড়িনি….হ্যাঁ যেটা হয়েছিলো …..সেটা ইনফ্যাচুয়েশনস…..তার জন্যে কেউ কেঁদে ভাসায় না বা বন্ধুকে এড়িয়ে চলে না…একসাথে যেতে না চাইলে যাবি না….কিন্তু নিজের কাছে নিজে কি চাস সেটা যদি পরিষ্কার থাকে , তাহলে আমার মনে হয় সম্পর্কের রূপরেখাগুলোর কোনো পরিবর্তন হয় না ।
সোহম চুপ করে কথা গুলো শোনে….তারপর বলে…’ যাক অনেক বকেছিস….আর নয়…তোকে একটা দায়িত্ব দিলাম…আমার আর রঞ্জার মাঝে যদি কেউ বোঝাপড়া করার অধিকার রাখে তো সে কেবল তুই….পারলে ওর কমপ্লেক্সটা কাটাতে চেষ্টা করিস….আর সামনের এগারোটা দিন কোনো কথা তো হবে না…ভালো থাকিস….নিজের আর রঞ্জার দুজনেরই খেয়াল রাখিস…আমি ফিরে জানাব ।
চাঁদ: নিশ্চয়ই ….তুই সাবধানে থাকিস…রাখছি বাই ।
….ফোনটা কাটার পর চাঁদ চুপচাপ খাটে শুয়ে সিলিং ফ্যানের দিকে তাকিয়ে রইল বেশ কিছুক্ষণ । ….ভাবতে থাকল…..সময় বড়ো অদ্ভুত …সময় বয়ে যায়…সাথে সাথে সম্পর্কও …যে মানুষটা একদিন সবচেয়ে কাছের থাকে ,সময়ের ঘাত প্রতিঘাত তাকে কেমন ভাবে যেন দূরে ঠেলে দেয়…চাঁদ আর ওমের মাঝে একটা নদী বয়ে যাবে অথচ মধ্যবর্তী কোনো সাঁকো নেই যে হাতটা বাড়িয়ে ধরবে….কেন যে জীবনের সব অঙ্ক মেলে না?….তার কোনো উত্তর নেই!…এরপরও পরস্পর মুখোমুখি হবে কিন্তু চাঁদ কিছুতেই তার অভিব্যক্তির আঁচ বুঝতে দেবেনা….যে চাঁদ অভিনয় এড়িয়ে চলতে চায় সারাজীবন …..সময় তাকে বারবার সেই অভিনয়ের সাথেই অভ্যস্ত হতে বাধ্য করে….হঠাৎ করে তার নিজেকে ভীষণ একা লাগল….সে এই কথাগুলো কোনওদিন কাউকে বলে হালকা হতে পারবে না…বৃষ্টি থেমে গেছে বেশ কিছুক্ষণ ….কিন্তু চাঁদের ভিজে চলা তো আজ থেকে শুরু….খুব রাগ হল তার বেয়াদপ মনটার জন্যে …কোন অসতর্ক মুহুর্তে সে এমন কাঠিন্যের বেড়া টপকে ফেললো কে জানে? যার মাসুল আজ তাকে এমনভাবে দিতে হচ্ছে …..আর কেউ না জানুক, জানলার বাইরে উজিয়ে থাকা, একফালি রম্বসের মত শিফন আকাশটাই কেবলমাত্র তার সাক্ষী হয়ে রইল ।
…….পরদিন কলেজে রঞ্জাদিকে দেখে একরাশ অভিমান জোড়ো হচ্ছিলো ….তারপর চাঁদ নিজেকে একটু শাসন করল…রঞ্জার ওপর তার বিরক্তি বা রাগের কোনো কারণ থাকা উচিত নয়…তবে কি হিংসে …না সেটাও উচিত না…যার যেটা ডেস্টিনি……॥
রঞ্জা: কিরে আজ এত চুপচাপ …? মনখারাপ?
চাঁদ: আমি তো জানি , মন তোমার খারাপ !
রঞ্জা: মানেটা কি??
চাঁদ: (একটু হেসে)…মানেটা তুমি জানো না বলতে চাও…কিন্তু আমি তো জেনেই বলছি ।
রঞ্জা: ও বাব্বা!!!!….তোকেও বলা হয়ে গেছে!!
চাঁদ: হুম…শুধু তাই নয় তোমার দেখভাল করতে বলেছে…বুঝলে…আপাতত আমি তোমার লোকাল গার্জেন ।
রঞ্জা: বুঝলাম ….আর কি বলেছে শুনি?
চাঁদ: বলেছে অনেককিছু….বলব কেন ,সব কথা…?
রঞ্জা: বল না প্লিজ….আমার মতো এরকম একটা মেয়ের সাথে কিভাবে সম্পর্ক হল …বলে নি তোকে….?
চাঁদ: একদম চুপ….’তোমার মত মেয়ে ‘….কথাটার মানে কি?…তোমার কিসের এত কমপ্লেক্স আমি বুঝি না…ইউ আর টু ব্রাইট ইন অল রেসপেক্ট…..
রঞ্জা: বুঝেছি তোকে এটাও বলেছে….তুই বুঝবি না চন্দ্রিমা…আমার সাথে আগে যার সম্পর্ক ছিল…আমি তাকে সবরকম ভাবে সাপোর্ট দিয়েছি …বোথ মেনটালি এ্যান্ড ……
চাঁদ: (রঞ্জাকে কথাটা শেষ করতে না দিয়েই )….তো কি হয়েছে?…তুমি ভালোবেসেছিলে বলেই তো…..সে যদি তোমায় ছেড়ে যায় তোমার অপরাধটা কোথায়?
রঞ্জা: ….না…তা নয় ….কিন্তু তুই জানিস কিনা আমি জানি না….আমি ওকে সবটা বলেই উঠতে পারি নি….তার আগেই ওকে আঁকড়ে ধরেছি….এক ভীষণ বিপর্যস্ত অবস্থায় ওকে জাপটে ধরে থেকেছিলাম বেশ কিছু সময়….তখন ও আমার কে আমি ভাবতে চাইনি….কিন্তু তারপর থেকে ও আমার ওপর যথেষ্ট দায়িত্ববান…কিন্তু আমার মনে হয় তোর মত কারোর সাথে ওর সম্পর্ক হলে বোধহয় ভালো হত…..॥
চাঁদ ভেতরে ভেতরে ক্ষয়ে যাচ্ছিল ….হয়ত বা পুড়েও যাচ্ছিল ….তবুও জোর করে বলল’ না…এইসব বাজে কথা তুমি আর ভাববেও না….বলবেও না…তুমি যা তুমি তাই….ও তোমার সব অবস্থা বুঝেই তোমাকে ভালোবাসে ….সব কথা বলে বোঝাতে হয় না , রঞ্জাদি….তোমার এমন সুন্দর একটা মন ….সেটা কে কেন অপমান কর বারবারে….প্রতিটা মুহূর্তকে বাঁচার মত করে বাঁচো…. ।
রঞ্জা চাঁদকে কেমন যেন এক নির্ভরতার আশ্রয়ে জড়িয়ে ফেলল….তারপর বলল…’আচ্ছা কথা দিলাম তোকে….তোর কথা শুনব….তা তুই বেদুইনে খাওয়াবি কেন?…জন্মদিন?
চাঁদ: তোমাকে , যে বলল তাকে জিজ্ঞেস করলে না কেন?
রঞ্জা: সোহম তো জানে না বলল…আমি বলি কি…ও আসলেই খাওয়াস…
চাঁদ: হুম….তাই ভেবে রেখেছি…ও আসুক আগে….তারপরই হবে ।
……..এইভাবেবেশ কটাদিন কাটল…রঞ্জা আর চাঁদের গল্পগাছাও বাড়ল….ধীরে ধীরে সোহমের দোষ গুণ আলোচনায় ওর অনুপস্থিতিটা দুজনেই মানিয়ে নিয়েছিল ওদের নিজের মত করে ।
……আজ চাঁদের জন্মদিন….চাঁদের বাড়িতে জন্মদিনের উৎসব বারণ….তাই মা দিনের দিন কিছুই করেন না….শুধু ওর একটু পছন্দ মত রান্না হয় বাড়িতে….গত দুবছর ধরে চাঁদ বন্ধুদের সাথে একটু ঘোরাফেরা করে….বাবা আপত্তি করে না ।…সকালে চাঁদ কলেজে যাবে বলে বেরিয়েও গেল না…গগনেন্দ্র শিল্প প্রদর্শনী তে ঘুরে ঘুরে ছবি দেখল……একটা অবন ঠাকুরের আঁকার বই কিনল….দুপুরে কিছু খাবে বলে একাডেমীর সামনে এসে ‘নাথবতী অনাথবত’…এর টিকিট কেটে থিয়েটার দেখল একা একা….তারপর ওখান থেকে বেরিয়ে সেন্ট পলস্ ক্যাথিড্রাল চার্চের ভিতরে বেশ কিছুক্ষণ চুপচাপ বসে রইল….চার্চের শান্ত সমাহিত পরিবেশে আত্মস্থ হওয়ার চেষ্টা করল চাঁদ….এইভাবে সময় কাটিয়ে সন্ধ্যে সাড়ে সাতটার পর বাড়ি এল চাঁদ…..সারাদিন কিছু খাওয়া হয়নি….বাড়ি ফিরতেই মায়ের হুকুম ….দিদা….বড়পিসি….ভাইয়া ফোন করে পায়নি চাঁদকে ….তাই ওদেরকে পাল্টা ফোন করতে হবে….চাঁদ জানে এখন খাবারের কথা বললেই মায়ের হাজার প্রশ্ন কেন খাইনি….কোথায় ছিলাম…তাই সে কিছু না বলেই নিজের ঘরে গেল….ফ্রেশ হয়ে সবার আগে ব্যাগ থেকে বইটা বার করে লিখল….’আমার জন্মদিনে আমি’….তারপর একে একে ফোন করে কথা বলল সবার সাথে….তারপর চুপচাপ শুয়ে রইল ….ভাবল কত মজা হতে পারত…কিন্তু হল না….কি অবহেলায় একটা দিন কাটাল….উফ যেন একটা মাস …কি দীর্ঘ !!!
…..এমন সময় রঞ্জাদির ফোন…
কিরে তোর ব্যাপার কি…আজ তো এলিই না কলেজে ….কার সাথে ঘুরে বেড়ানো হল ,বল?…আমরা সবাই বাদ…দাঁড়া সোহম আসুক….বলব…হচ্ছে তোর ।
চাঁদ : আরে না গো বেরোইনি আজ….
রঞ্জা : যাক গে….ছাড় পড়ে শুনব আজ কি করলি….বাই দ্য ওয়ে…আজ তোর জন্মদিনই তো….শুভেচ্ছাটা তো জানাতে দে…
চাঁদ হেসে বলল…’ তোমাকে অতো ফর্মাল হতে হবে না….আমি জানি তোমার ওয়েল উইশ আমার সাথে সবসময় আছে….
রঞ্জা: তুই একটা পাগলী….কাল আয় কথা হবে….হ্যাপি বার্থ ডে….বাই
চাঁদ: থ্যান্ক ইউ…বাই…টাটা
….তখন প্রায় ন’টা বাজে…একটু ঘুম এসে গেছিলো চাঁদের…ঘুম ভেঙে গেল মায়ের ডাকে…’চাঁদ আমি চিলিচিকেন আর ফ্রায়েড রাইস বানিয়েছি….একটু পরে নেমে আয়….নীচে’
….চাঁদ বিছানায় উঠে বসল….নীচে নামতে যাবে….ফোনটা বেজে উঠল….
চাঁদ: হ্যালো
-মেনি হ্যাপি রিটার্নস অফ দ্য ডে…কিরে আজ খাওয়ালি সবাইকে?
একঝলক খুশি সোহমের কন্ঠস্বরে…..
চাঁদের চোখটা চিকচিক করে উঠল….ভীষণ একটা ভালোলাগায় তার কথাগুলো হারিয়ে যাচ্ছিল …বলল ‘তুই ? কোথায় ? বাড়ি চলে এসেছিস ?
সোহম:নারে বাবা….ক্যাম্পেই ।
সকালেই করতাম কিন্তু….কখন ফোন করব এটা ভাবতে গিয়েই একটু অন্যমনস্ক হয়ে গিয়েছিলাম মার্চ পাস্টে….ব্যস কোর্ট মার্শাল হয়ে গেল….এই একটু আগে ছাড়া পেয়েছি ।
চাঁদ: এ বাবা….অত ছটফটানির কি আছে? আমি কি পালিয়ে যাচ্ছি ?
সোহম: না…তবে কেন জানিনা মনে হল তোর ভালো লাগবে ।
চাঁদ: হুম…ভালো তো লাগলো…কারণ আশাতীত….আমি ভাবিই নি ….
বাই দ্য ওয়ে আমি খাওয়াই নি..তুই এলেই হবে ।
সোহম: ওহ গড….কেন?..তুই একটা পাগলী…আচ্ছা রাখছি…কমান্ডার অফিসার এদিকে আসছেন..বাই
চাঁদ: বাই বাই…টেক কেয়ার
…..অদ্ভুত একটা ভালো লাগা তার সারাদিনের কৃচ্ছসাধনের যন্ত্রণাকে এক লহমায় ভুলিয়ে দিল……এবার তার ভীষণ ক্ষিদে পেতে লাগল….নীচে গিয়ে মায়ের গলাটা জড়িয়ে চাঁদ বলল…কই কি বানিয়েছো….দাও আমায়!!!!মা বলল…. ‘ বস, বাবা অপেক্ষা করছে কখন থেকে’….চাঁদ বাবার দিকে তাকিয়ে বলল….এই তোমার আসার সময় হল ….অফিস থেকে….আজকেও এত দেরী ?’….বাবা বলল ‘এবার খেতে বস… পরে ঝগড়া করবি’…. ।
…………………………………………………………………………………………………………………………………………………ক্রমশ
© Copyright 2014 @indrila, All rights Reserved. Written For: Oimookh